ইন্দুরকানী প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মারাত্মক ভাবে বেড়েছে চুরির উপদ্রব। এর কারণ হিসাবে দায়ী করা হচ্ছে করোনায় কর্মহীন বেকারদের। যারা বিভিন্ন শহর থেকে কর্ম হারিয়ে এখন গ্রামে এসে বসবাস করছেন। আবার অনেক সাধারণ পরিবারের যুবক ও মাঝ বয়সীরা ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়ায় মত্ত থাকে গভির রাত পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের চায়ের দোকানসহ নানা ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই জুয়াড়িরা ভিড় জমায়। আর জুয়া খেলার অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকে আবার জড়িয়ে পড়ছে চুরিতে। খেলা শেষে যারা হেরে যায় তারা নতুন করে অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে মানুষের বাড়িতে হানা দিচ্ছে চুরি করা উদ্দেশ্যে বলে স্থানীয়দের ধারনা। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ বাড়িতে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে তারা। এ সময় মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরি করছে চোরেরা। সম্প্রতি ইন্দুরকানী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু চুরির ঘটনা ঘটেছে। অনেক বাড়িতে সিঁধেল চুরি হচ্ছে। আবার খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেও চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি রিক্সা, ভ্যান, ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সাও চুরি হয়েছে বেশ কয়েকটি। বর্তমানে কৃষকের বাগানের শুপারি থাকায় সেটাও চুরি হচ্ছে নিয়মিত। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মুজিবর শিকদারের গ্যারেজ থেকে আঃ হাকিম হাওলাদারের পুত্র আবুল হোসেনের রিক্সার ব্যাটারী এবং ইসাহাক শেখের পুত্র আঃ হাই শেখের ব্যাটারী চালিত রিক্সা চুরি হয়ে গিয়েছে। গত তিন মাসে উপজেলার কেয়ার পত্তাশী রোড থেকে গ্যারেজের সাটার ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ইন্দুরকানী ইউনিয়নের শুধু মাত্র চাড়াখালী গ্রামেই ১১ বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ছগির হাওলাদার, সাইফুল হাওলাদার, নাসির হাওলাদারসহ একাধিক ভুক্তভোগীরা । উত্তর ভবানিপুর গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মেহেদি হাসান জানান, প্রায় ২৫ দিন পূর্বে তাদের ঘরে সিঁধেল চোর হানা দিয়ে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ৩২ হাজার টাকা মূল্যের কানের দুল ও একটি মোবাইল ফোন সেট চুরি করে। এ ঘটনায় ইন্দুরকানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন তারা। ১৭অক্টোবর উপজেলার দক্ষিণ ভবানিপুর গ্রামের ডাকুয়া বাড়ির উত্তম ডাকুয়া ও দ্বীজেন ডাকুয়ার ঘরের লোকদের খাবারের সাথে চেতনা নাশক ওষুধ সেবন করিয়ে দুটি ঘরে চুরি করা হয়। ওষুধ মিশ্রিত খাবার খেয়ে ৮ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। একের পর এক চুরি ঘটনায় এলাকার মানুষ এখন সংকিত। ইন্দুরকানী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা এখন সময়ের দাবী বলে মন্তব্য করেছেন সমাজের বিশিষ্ট জনেরা। রিক্সা চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্দুরকানী থানার ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই চুরির সাথে জড়িত। এই চক্রটি ধরার জন্য আমরা তৎপর রয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের নিয়মিত টহল আরো জোরদার করা হয়েছে।
Leave a Reply